সর্বশেষ

Friday, April 10, 2020

মধু ও কালোজিরা খেয়ে যেভাবে সুস্থ হলেন এক গভর্নর

মধু ও কালোজিরা খেয়ে যেভাবে সুস্থ হলেন এক গভর্নর


কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস)-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন নাইজেরিয়ার একটি রাজ্যের গভর্নর। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
কিন্তু কিভাবে?
এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন রাজ্যটির গভর্নর সেয়ি মাকিন্দে।

নাইজেরিয়ার একটি সংবাদমাধ্যম বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যায় দেশটির একটি রেডিওতে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে গভর্নর মাকিন্দে জানান, তিনি অসুস্থের সময় মধু, ভিটামিন সি ও ব্ল্যাকসিড অয়েল (কালোজিরার তেল) ব্যবহার করেছেন।’

গভর্নর বলেন, ‘ওয়ো রাজ্যের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্বে আছেন আমার খুব ভাল বন্ধু ও ভাই ডা. মুইদিন ওলাতুনজি। তিনি একদিন আমার কাছে এসে বললেন, দেখুন, আমি আপনাকে কালোজিরার তেল পাঠাচ্ছি। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই আমি মধুর সঙ্গে কালোজিরার তেল মিশিয়ে এক চা চামচ সকালে এবং সন্ধ্যায় খেয়েছি।’
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে স্থানীয় সমাধানের কথা উল্লেখ করে সেয়ি মাকিন্দে বলেন, ‘আমাদের লোকদের হতাশ করা উচিত নয়। আমি যেমন আমার পদ্ধতি দিয়ে ভাইরাস থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছি, তেমনি এটি আমাদের বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেও কার্যকর হবে।’

আইসোলেশনে থাকার সময়ের কথা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘এসময় আমি কিছুটা ওজন কমিয়েছি। মনে হয় এটা আমার জন্য ভালো। আপনি যখন আইসোলেশনে থাকবেন, তখন শুধু টেলিভিশন দেখা ও খাওয়ার মধ্যেই থাকার প্রবণতা হবে। এসময় আমি আমলা খেয়েছি। তবে আমি ট্রেডমিলও ব্যবহার করছিলাম।’

নিজ রাজ্যের জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আমরা যে কর্মসূচি নিয়েছি তা মেনে চলবো। লকডাউনের যে নির্দেশনা আছে তা মেনে চলবো।’
'আয়নাবাজি'র একটি রিভিউ

'আয়নাবাজি'র একটি রিভিউ


''চারপাশ বদলে যায়,
থেমে যায় সময়;
সবার জন্য সব সত্য,
আমার জন্য অভিনয়।''

এই একটি সংলাপই আসলে যথেষ্ট 'আয়নাবাজি'কে বর্ণণা করার জন্য । আয়নাবাজির আয়নাতে আমাদের সমাজেরই চারপাশের থাকে মুখোশের আড়ালের মানুষগুলোর আসল রূপ দেখিয়ে দেয় ।
এই শহরের আনাচে-কানাচে অসংখ্য গল্প লুকিয়ে আছে , কিছু গল্প আমাদের চোখের সামনে দৃশ্যমান , কিছু গল্প আমাদের অগচোরেই থেকে যায় , যার অস্তিত্ব হয়তো আমরা ধারণাই করতে পারিনা । এরকমই একটি গল্প পর্দায় তুলে এনেছেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী । পরিচালক হিসেবে তিনি যে খুব পরিচিত কেউ তা বলবোনা । কারণ তিনি ছিলেন বিজ্ঞাপণের নির্মাতা আর বিজ্ঞাপণের পেছনের মানুষদের খবর আমরা কে কতোই বা রাখি ? তিনি যখন এই চলচ্চিত্র নিয়ে আসেন তখনও এর সফলতা নিয়ে কিন্ঞ্চিত সন্দিহান ছিলাম কারণ ঢালিউডের সেসময়ে দর্শকরা প্রায় হল থেকে মুখ ফিরিয়েই নিয়েছিলো । মানহীন ছবির মিছিলে বছরে শুধু ঈদের সময়টাতেই মানুষ একটু হলমুখী হতো মানসম্মত কাজের আশায় । মাল্টিপ্লেসগুলো টিকে থাকতো মার্কিন চলচ্চিত্রের কল্যানে । কিন্তু আয়নাবাজি যখন হলে আসে তখন কোন উৎসব বা সরকারি বিশেষ দিবস ছিলোনা , প্রচারণাও সেরকম হয়নি । তবুও চলচ্চিত্র মুক্তির পরে আলোড়ন ফেলে দেয় । মানুষের ভীরে হলে জায়গা দেওয়া ভার । মানসম্মত গল্পের হাহাকারটা খুব ভালোই বোঝা যায় ।
এজন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে একটা ধন্যবাদ দিতেই হয় । ফেসবুকের রিভিউএর কল্যানেই মুভিটি এতটা সাড়া ফেলে ।
প্রধান চরিত্রে চন্ঞ্চল চৌধুরী অসাধারণ , অনবদ্য অভিনয় করেছেন । ছয়টি ভিন্ন চরিত্রের প্রতিটিতেই তিনি ছিলেন যথাযথ । বলতে গেলে তিনিই মুভির সবকিছু । বহুদিন পর ফিরেই আবার বাজিমাত করে দিয়েছেন তিনি এবং পরবর্তীতে 'দেবী'তেও সে ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্য রেখেছেন । নবাগতা হিসেবে নাবিলা তার ন্যাচারাল অভিনয়ের উপযুক্ত যাচাই করেছেন , পার্শ্ব চরিত্রে পার্থ বড়ুয়া , গাউসুল আলম শাওন আর সেই '' ছোট বাচ্চাটা '' নিজ নিজ চরিত্রে পারফেক্ট ছিলেন । অতিথি চরিত্রে আরিফিন শুভ একটা সার্প্রাইজ ছিলো ।
সংলাপগুলো একটা মুভির সাথে দর্শককে ধরে রাখে । এই মুভির সংলাপগুলো এই মুভির ভাইরাল হবার অন্যতম একটা কারণ । ঢালিউডের মুভির সংলাপ দিয়ে আলোচনায় আসা সচরাচর ঘটেনা । প্রতিটা সংলাপই দূর্দান্ত ছিলো এবং বেশ কিছু সংলাপ তখন সবার মুখে মুখে ঘুরতো ।

থ্রীলার মুভিতে বিজিএম অত্যন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে গল্পের আবহটা আরও ভালোভাবে অনুভব করাতে । সেই হিসেবে মুভির বিজিএম ১০/১০ । এরপর বলতে হয় টাইটেল ট্র্যাকটার কথা । মুভির জনারের সাথে পুরোপুরি খাপ খায় গানটি । এরকম বিজিএম যে ঢালিউডে হতে পারে তা অনেকেরই ধারণায় ছিলোনা । হাবিব ওয়াহিদের ''ধীরে ধীরে যাওনা সময় এর পুনঃসৃষ্টি শ্রুতিমধুর ছিলো । অর্ণবের '' এই শহর আমার '' গানটা এই কঠিন শহরকে আবার ভালোবাসতে শেখাবে । চিরকুটের '' পাপ জমাই '' গানটা হৃদয়স্পর্ষী ছিলো ।
সিনেমাটোগ্রাফির কথা আলাদা করে বলতেই হয় । পুরান ঢাকার এক অচেনা রূপ উঠে এসেছে এই মুভিতে । পুরাণ ঢাকা বলতেই যাদের চোখে হাজার হাজার রিক্সা , চিপা গলি , পুরনো ঘিন্ঞ্জি বাড়ি ভেসে ওঠে তারা নতুন করে চিনবে এই এলাকাকে । ভিএফএক্সের কাজ যেটুকু ছিলো নিখুঁত ছিলো ।

সব মিলিয়ে লকডাউনের এই সময়ে বাসায় বসে পড়ন্ত বিকেলে উপভোগ করার জন্য উপযুক্ত চলচ্চিত্র । দূর্দান্ত থ্রিলীং গল্প , তার মাঝে আবার ছোট্ট একটি ভালোবাসার গল্প আর কিছু ভাঁড়ামোবিহীন কমেডি ।
IMDB - 9.2/10
লিখেছেন-শাফিন আহমেদ