৩২ বছর আগে আমি আর আমার বন্ধু মিল্লা একটা কাপড়ের ব্যবসা দেই । ব্যাবসার টাকা আব্বার কাছ থেইকা নিছিলাম । ৭০ ভাগ টাকা আমি দেই আমার বাকি ৩০ ভাগ আমার বন্ধু দেয় । আমি আমার পুরাটাই এই ব্যাবসায় দিয়া দিছিলাম । আব্বা বিশ্বাস কইরা টাকাটা দিছিলো আমারে ।
ব্যাবসা ভালই যাইতেছিলো , ২ বছর হয়া গেছিলো প্রায় । একদিন নদীর ওই পারে ৩ জন আমারে চাকু ধইরা কয়াকটা কাগজে সই করতে কয় । আমি বুইজা গেসিলাম এগুলা আমার ব্যাবসার কাগজ । কিন্তু কিছু করার ছিলো না । আমি সই কইরা দেই আর পুরা ব্যাবসা ওই বন্ধুর হইয়া যায় । তার দুই মাস পর আব্বা খুব অসুস্থ হইয়া পরে । আমি আমার যা আছে সব বেইচা চিকিৎসা করাই । কিন্তু একটা সময় বেচার মতো আর কিছু ছিলো না আমার হাতে । আমি খুব লজ্জা নিয়া ওই বন্ধুর কাছে গিয়া নিজের ব্যাবসার ৭০ ভাগের ২০ ভাগ চাই তার পায়ে পইরা , আব্বার কথা বইলা । কিন্তু সে আমারে দেয় নাই । আমার যাওয়াটা মনে হয় বোকামি ছিলো, কিন্তু আমার করার কিছু ছিলো না। যে বন্ধু আমার বাসায় আসতো ,যে বন্ধুরে আব্বা পছন্দ করতো সেই বন্ধু সেদিন আব্বার জন্য টাকা দেয় নাই। দুনিয়া কতটা আগুনের মত ভয়ানক তা সেদিন বুঝছি । আব্বা মারা যায় ।
তারপর আমি কষ্ট কইরা সেলাই মেশিন কিনা রাস্তায় বসি । এর পর থেইকা আমি ঠিক করছি সারাজীবন এমন সহজ ভাবেই জীবন কাটামু আমার । বেশি দরকার নাই ,সারাদিন রাস্তায় বইসা যা আসে তাই দিয়া হয়া যায় আমার ।
ওই বন্ধু অনেক বড় গার্মেন্টস দিছিলো , আগুনে পুইরা গেছে । এখন সে জেলে ।
-ওয়াসিফ কবির
-ওয়াসিফ কবির